নরসিংদী সদরকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে- নজরুল ইসলাম হিরো


বার্তা বিভাগ প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৪, ৩:৫২ অপরাহ্ন /
নরসিংদী সদরকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে- নজরুল ইসলাম হিরো

নিজস্ব প্রতিনিধি :-

রাজধানী ঢাকার সংলগ্ন তাঁত ও কৃষিনির্ভর জেলা নরসিংদী। নারায়ণগঞ্জ মহকুমা থেকে ১৯৮৪ সালে এ জেলা স্বীকৃতি লাভ করে। তাঁত কাপড়ের ম্যানচেষ্টারখ্যাত মাধবদী বাজার ও বাবুরহাট এ জেলায় অবস্থিত। তাঁত শিল্পের পাশাপাশি সবজির ভাল ফলন হয় বলেও খ্যাতি রয়েছে এ জেলায়। প্রচুর পরিমাণে সবজি, কলা ও দেশীয় ফল উৎপাদনেও রয়েছে সুনাম। এসব সবজি, কলা ও ফল জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। জেলার সর্বত্র লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। তার মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলা অন্যতম। মেঘনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, আড়িয়াল খাঁ ও হাঁড়িধোয়া নদী বেষ্টিত এ উপজেলা। সদর উপজেলাটি ১৪টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভা ও ২টি থানা নিয়ে গঠিত হয়েছে। এর আয়তন প্রায় ২১৩.৪৪ বর্গকি.মি. মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫৭৮৫৬৩ জন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩টি ইউনিয়ন বাদে ১১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে নরসিংদী সদর-১ আসনের সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা হিসেবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে উন্নয়নের দূর্বার গতিতে যেমন এগিয়ে নিচ্ছেন ঠিক তখনই এ সংসদীয় আসনের একজন সফল সাংসদ উন্নয়নের রূপকার হিসেবে নরসিংদী সদর উপজেলাবাসীর আশার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত লাভ করেছেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরো (বীর প্রতীক) এমপি। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে সুনাম অর্জন করেছেন। এ উপজেলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার সময় যে উন্নয়ন হয়েছে তার বিন্দু মাত্র উন্নয়ন মূলক কাজ বিগত কোন সরকারের আমলে হয়নি বলে স্বীকার করেন সদর উপজেলাবাসী। নরসিংদী সদর-১ আসন থেকে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরো (বীর প্রতীক) এমপি টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় ফলেই এমন উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন বলে মনে করেন তারা।
সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরো (বীর প্রতীক) এমপি’র সাথে প্রতিনিধি’র কথা হলে তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের উন্নয়নের স্থপতি। স্বাধীনতার পর এ দেশের উন্নয়নের একমাত্র দাবিদার আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণের জন্য কিছু করতে না পারলেও নিজের জন্য অনেক কিছু করতে পেরেছেন। ভাঙা সুটকেস থেকে অত্যাধুনিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি সবই হয়েছে তাদের। শুধু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছে বলেই আমার নির্বাচনী এলাকায় মেঘনা নদী বেষ্টিত দূর্গম চরাঞ্চল নজরপুর-করিমপুর ইউনিয়নের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম মেঘনা নদীর উপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতু, হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে মেঘনা, হাঁড়িধোয়া, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও আড়িয়ালখাঁ নদী খনন ও দৃষ্টিনন্দন বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ১১টি ইউনিয়নে নতুন রাস্তা ঘাট নির্মাণ ও সংস্কারের পাশাপাশি আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্হা, একগ্রাম থেকে অন্যগ্রামে সহজে যাতায়াতের জন্য অসংখ্য ছোট-বড় কালভার্ট নির্মাণ, বাড়ি বাড়ি নিরাপদ পানির ব্যবস্হা, আধুনিক জেলা হাসপাতাল, শিশু একাডেমি, বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ ও সংস্কার, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, মসজিদ, মন্দির সংস্কার ও নির্মাণ, উপজেলাকে ১০০ ভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও মৎস্য খাতে আমূল-পরিবর্তন করা সহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এর মধ্যে চরাঞ্চলের মানুষ শহরে সহজে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য ২৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা সহ ৮০ কোটি ৬৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যায়ে ৬শ’ ৩০ মিটার মেঘনা নদীর উপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতু, পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদীর তত্ত্বাবধানে ৯শ’ ৩ কোটি ৪১ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক মেঘনা নদীসহ ৬টি নদীর খননকাজ এবং নদীর দুপাড়ে ২শ’ ৩৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার শহররক্ষা বাঁধ ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছি। ফলে শহর ও চরাঞ্চলবাসী নদী ভাঙ্গন ও বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবায় উন্নয়নের জন্য শহরের অদূরে বাসাইলে ৩৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালটি ২শ’ ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত করেছি। এতে করে নরসিংদী ও আশপাশের জেলাবাসীদের জরুরী উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও শিশু একাডেমি, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, মসজিদ-মন্দির সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং অসংখ্য স্কুল-কলেজ উন্নয়ন ও নতুন ভবন নির্মাণ আজ দৃশ্যমান। শুধু তাই নয় উপজেলাকে শিক্ষা নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে দ্বিতল ভবন থেকে ৪তলা ভবন নির্মাণ করেছি। নরসিংদী জেলা তাঁত শিল্পের মেলা হিসেবে খ্যাতি লাভ করায় নরসিংদীতে অবস্থিত তাঁত বোর্ড জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে আধুনিক ও উন্নয়নের ছোঁয়ায় এনে তাঁত বোর্ডটি পূর্ণ নির্মাণ করেছি। এতে করে প্রতিবছর এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হাতে-কলামে শিক্ষা নিতে পারছেন। তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রত্যেক জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা। তার এই ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে নরসিংদীতে একটি মেডিকেল কলেজ এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অল্পসময়ের মধ্যেই তা দৃশ্যমান হবে (ইনশাআল্লাহ)। শহর থেকে বিচ্ছিন্ন নদী বেষ্টিত কৃষি সমৃদ্ধি আলোকবালি ইউনিয়নের মানুষ সরাসরি শহরে যোগাযোগ স্থাপনের মেঘনার শাখা নদীর উপর দুইটি ব্রীজ ও রাস্তার কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তারই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন আজ বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করে নরসিংদী সদর উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করুণীয় তা করবো (ইনশাআল্লাহ)। তাই শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন মানুষের সেবা করে যেতে চাই।